
যদি কামনা বাসনা না থাকতো তবে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিতো’ জনৈক মনস্তাত্ত্বিক কথাটি বলে গেছে। মানুষ শুধুমাত্র সামাজিক জীব নয়; মানুষ প্রকৃতিক জীবও বটে। প্রকৃতিকভাবে আল্লাহ মানুষের মাঝে প্রবৃত্তির চাহিদা দিয়ে দিয়েছেন, যা অস্বীকার করার সাধ্য আমাদের নেই।
যৌন চাহিদা মানুষকে মাতাল কিংবা কাণ্ডজ্ঞানশূন্য ও করে দেয়। এই দুর্দমনীয় প্রবৃত্তি থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তায়লা ‘বিবাহ’ নামক এক পুস্প রঞ্জিত পরিবেশের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
.
কিন্তু আফসোস! বর্তমান সমাজে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের যুবক বিবাহের পরও ব্যভিচারের খাতায় নাম লেখাচ্ছে। ‘ব্যভিচারব নামক দুর্গন্ধযুক্ত আবর্জনার কথা আমাদের কারো অজানা নয়।
না জেনেই হোক! এই আবর্জনায় আমার বা আপনার মতো অনেক যুবক বা যুবতী স্নান করছে প্রতিনিয়ত।
.
‘বিয়ে করেও ব্যভিচার’ বাক্যটি শুনে হয়তো কিছু যুবক শুখনো পাতার হাসি দিয়ে বলবে ‘ব্যভিচার থেকে রক্ষা পেতেই তো বিয়ে করেছি, আমরা কি আর বিয়ে করা বউ রেখে অন্যকে নিয়ে রাত কাটাচ্ছি নাকি!’
তবে শুনো যুবক!
রাসূল (সাঃ) এর কথা অনুযায়ী বিয়ে করা শর্তেও ব্যভিচারে লিপ্ত হবে কিছু যুবক। বিয়ের জন্য প্রধান শর্ত হলো, মোহর প্রদান এবং স্ত্রীর খরচ বহন করা। যারা এই শর্ত কে অস্বীকার করেছে, যারা স্ত্রীর খরচ বহন বা মোহর প্রদানে কোনো রকম প্রতারণার আশ্রয় নিবে তাদের জন্য স্ত্রীর বসবাস ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
হাদিসে এসেছে,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্ণনা করেন, ‘আনসারি সাহাবিদের ভালোবাসা ঈমান আর তাদের প্রতি বিদ্বেষ রাখা কুফরি এবং যে ব্যক্তি কোনো নারীকে বিয়ে করেছে কোনো মোহরের ওপর এবং তা দেয়ার ইচ্ছা তার নেই, তাহলে সে ব্যভিচারী।’
শুধু তা-ই নয়, (এ সব লোকেরা পরকালে) আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের দিনও ব্যভিচারী হিসেবেই সাক্ষাত করবে। আর যে ব্যক্তি কারো কাছ থেকে ঋণ নিয়ে (পরিশোধ করেনি), সে-ও আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের দিন চোর হিসেবে সাক্ষাত করবে।’
.
বর্তমান সমাজে কিছু যুবক মনে করে, ‘বিয়ে যখন করেছি! বউ তো আমারই’ আর বউয়ের টাকা মানে আমার টাকা। সে টাকা দিয়ে কি করবে! তারচেয়ে বরং টাকাটা আমার কাজেই লাগাই।
কিন্তু ভাই! তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো আল্লাহ পাক কুরআনুল কারিমে বলেছেন, و اتوهن صدقتهن نحلة
(অর্থঃ আর তোমরা স্ত্রীদের মোহর দিয়ে দাও খুশিমনে।
সূরা নিসা-৪)
আল্লাহ পাক মহর স্ত্রীর হাতে বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে হ্যাঁ! স্ত্রী যদি নিজ ইচ্ছায় মন থেকে মোহর মাফ করে দেয়, তবে ভিন্ন কথা। তবে প্রত্যেকের উচিৎ স্ত্রীকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া।
.
তাই বলবো আসুন! জাহেলী যুগের মখমল আবসাব ছিঁড়ে ফেলে, অন্ধ চেতনার ঘোর কাটিয়ে চারিপাশ আলোক প্রজ্জ্বলিত করি। দেখবেন সাংসারিক জীবনকেও আর কখনও আঁধার ঘেরাও করতে পারবে না। স্ত্রীকে ভালো রাখার মাঝেই কিন্তু আপনার ভালো থাকার কৌশল লুকিয়ে থাকে।
.
লেখাঃ হাবিবা রহমান