Why PUBG Mobile should Unban? E-sports essential in Bangladesh

১৯৭১ সালে, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে , দেশের অবস্থা ছিল খুবই শোচনীয়। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তো দূরের কথা,মানুষের কাছে দু-বেলার আহারও ঠিকমতো ছিল না। ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে জাতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। একসময় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তেমন ভালো না থাকায় মানুষজন পরিবেশের সাথে মাঠ পর্যায়ের খেলাগুলো (ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি) অবসর এর বিনোদন হিসাবে নিতেন। যদিও ততদিনে সেই খেলা গুলো জাতীয় পর্যায়ে খেলা হতো। তবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ও জাতীয় পর্যায়ে খেলা শুরু করেন। টুর্নামেন্ট ও প্রতিযোগিতামূলক খেলার মধ্যে ক্রিকেটে নাম ও খ্যাতি অর্জন করে বাংলাদেশ। ধীরে ধীরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন হতে শুরু করে। বিদ্যুৎ, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, অনলাইন ভিত্তিক সেবা গুলোও শহর থেকে শুরু করে গ্রামের সাধারণ মানুষের পর্যায়ে পৌঁছে যায়। মানুষ ধীরে ধীরে এইসবের সঠিক ব্যবহার বুঝতে শুরু করে। অনেকেই ইতিমধ্যে মোবাইল ও কম্পিউটার গেমস গুলোর সাথে পরিচিত হয়ে গিয়েছিল এবং এগুলো উপভোগও করত অবসর সময়ে। তবে তখন খুব কম ব্যাক্তিই ধারণা করতে পেরেছিল যে, এই অনলাইন ভিত্তিক কম্পিউটার ও মোবাইল গেমস গুলো একদিন ভবিষ্যৎ এর জাতীয় স্পোর্টস এ নাম লেখাবে। যদিও ততদিনে কল অফ ডিউটি (Call of duty) ও আরও কিছু ব্যাটেল রয়েল কম্পিটিটিভ গেমগুলো বাইরের দেশে ই-স্পোর্টস এর বাজারে, জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এই গেমগুলো নিয়ে, ফুটবল ও ক্রিকেটের মত টুর্নামেন্টে করে বাইরের দেশ গুলোতে খেলার আয়োজন করা হতো। ২০১৯ সালে করোনা মহামারীর শুরু হয়। তখন বাইরে যাওয়া সবার জন্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়ায় আমরা সবাই ঘরে থেকে ইনডোর গেম গুলার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারি। যদিও বাংলাদেশ থেকে অনেক স্ট্রিমার ও ভিডিও-ক্রেটরস ইতিমধ্যে অনলাইনে তাদের ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। তবে তাদের জনপ্রিয়তা বহুগুণ বেড়ে যায় করনা মহামারীর সময় থেকে। যখন মানুষ ঘরে বসে থেকে তাদের গেম খেলার লাইভ স্ট্রিম গুলো, ও কম্পিটিটিভ গেমগুলো উপভোগ করত। তখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায় PUBG MOBILE (পাবজি মোবাইল)। যা একটি ব্যাটেল রয়েল, কম্পিটিটিভ অনলাইন গেম। এটার খেলার নিয়ম খুব সোজা হওয়ায়, পাবজি মোবাইল এর খেলোয়াড় বাংলাদেশ এ অনেক তৈরি হয়ে যায়। এবং বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বে, ই-স্পোর্টস এ নাম লেখায় পাবজি মোবাইল এর মাধ্যমে। এরই প্রেক্ষিতে ২০২০ সালে দুবাই এ আয়োজিত, ২০ লক্ষ ডলার প্রাইজ পুলের আয়োজিত টুর্নামেন্ট এ বাংলাদেশী টিম A1esports আমন্ত্রিত থাকে। এবং প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নাম ও বাংলাদেশের পতাকাকে ই-স্পোর্টস এর বিজয় এর পাতায়, সারা পৃথিবীর সামনে উঁচিয়ে ধরে। আর পুরস্কার হিসাবে, 20000$ বাংলাদেশে নিয়ে আসে। ই-স্পোর্টস গেমগুলোর মধ্যে পাবজি একটি জনপ্রিয় নাম। যার চাহিদা সারা বিশ্বে এক বিলিয়নেরও বেশি। চাইনা ও জাপানে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে ছাত্রদের টিউশনি দেয়া হয় এই গেমগুলোতে দক্ষ হয়ে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে, আয় করতে ও দেশকে স্বাবলম্বী করতে। ফিরে আসি ২০১৯ এর করনার মহামারীতে, সেই সময় অনেক খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ ও অভাবগ্রস্ত এলাকাকে চিহ্নিত করে তাদেরকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকেই অনেক স্ট্রিমার ও ভিডিও-ক্রেটর লাইভে এসে ও চ্যারিটি করে, সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে বলেন। এরমধ্যে পাবজি মোবাইলের কিছু জনপ্রিয় স্টিমার সেই সময় অনেক ফান্ড তুলে, অভাবগ্রস্তদের ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করেন। (Honorable mention: NOOBOSS, Apollo Gaming, Arpon plays YT, Headshot king, sinister and many others, proof link available yet on their stream) তাদের দ্বারা অনেক অভাবগ্রস্ত ও অনাহারে থাকা মানুষ উপকৃত হয়েছিলেন সেই সময়।এছাড়াও 2022 সালে বাংলাদেশে বিশাল বন্যা দুর্যোগের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াই পাবজি মোবাইল স্ট্রিমাররা । যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যারিটি স্ট্রিম করে টাকা উত্তোলন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করেছিল। এবং সম্প্রতি সময়ে PUBG Mobile এর জনপ্রিয় স্টিমার ক্যারিমিনাতি (ভারতের) উড়িষ্যা ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য ১২ লক্ষ রুপীর চারিটি স্ট্রিম করেন। শুধু তাই নয়, অনেক সময় দেখা যায়, কোন রোগী রক্তের অভাবে অথবা কিডনির সমস্যা কিংবা ব্রেন টিউমার এর মত মারাত্মক রোগে, আর্থিকভাবে, ও নিজ থেকে চিকিৎসা করতে না পারলে, তারা স্ট্রিমার ও সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত ব্যক্তিদের থেকে সাহায্য চায়, এবং তাদের জন্য অনেক স্ট্রিমাররাই লাইভে এসে, তাদের জন্য ফান্ড রেইস করেন। এভাবে অনেক রোগী মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে এসেছেন। শুধু তাই নয় ফিরে আসি এবার সারা পৃথিবীতে কিভাবে এর বিস্তার ও চাহিদা ঘটছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম পৃথিবীর কাছে বাংলাদেশের নিজস্ব একটা গর্বের বিষয়, ঠিক তেমনি পৃথিবীতে এখন জনপ্রিয় একটি বিষয় হচ্ছে ই-স্পোর্টস। ই-স্পোর্টস হচ্ছে, অনলাইন ভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও টুর্নামেন্টে মূলক খেলা। যেখানে একটি খেলা কে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দল থাকে ও স্পন্সর ও থাকে এবং পুরস্কারও থাকে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে, ফুটবল ও ক্রিকেটের মত পাবজি মোবাইল ই-স্পোর্টসকে তাদের অফিসিয়াল টেলিভিশন থেকে সরাসরি সম্প্রচার করে, পাবজি মোবাইল অফিসিয়াল টুর্নামেন্টকে। এই গেমটি খেলার ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে তার বয়স অবশ্যই ১৮ এর ঊর্ধ্বে হতে হবে। ভালো ইন্টারনেট কানেকশন ও একটি ডিভাইস থাকা লাগবে। অনেকেই ই-স্পোর্টসে খেলাকে এডিকশন/নেশা বা জুয়া এমন সব বিষয়ের সাথে মিলিয়ে ফেলছেন। এটার প্রধান কারণ হতে পারে বিশ্ব ই-স্পোর্টসের বিষয়ে কম ধারণা থাকা। কারণ পড়ালেখা ও কাজের পাশাপাশি সবসময়ই এক দুই ঘণ্টা ফুটবল বা ক্রিকেট খেলি, ঠিক তেমনি ই-স্পোর্টস গেমগুলোতেও দিনের ১/২ ঘণ্টা, যার কাছে যেমন সময় থাকে সে সময় গুলো গেম খেলে দক্ষতা অর্জন করতে পারে।এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে ই-স্পোর্টস খেলা গুলোতে পারদর্শী প্লেয়ার গুলো, সাধারণত বিজ্ঞান ও গণিতে অনেক পারদর্শী হয়। কারণ ই-স্পোর্টস খেলতে হলে বুদ্ধি, দক্ষতা, ধৈর্য ও টিমে খেলার মানসিকতা থাকা লাগে। তাই এই পাবজি মোবাইল গেম খেলে আসক্ত হচ্ছে বাচ্চারা এটা ভেবে, সম্পূর্ণ বিচার না করে, এর ভালো দিক গুলোর দিকে নজর দেওয়া উচিৎ প্রশাসনের। এবং এই গেম কেউ নেগেটিভ ভাবে ব্যাবহার করলে, সেই ক্ষেত্রে বয়স সীমা দিয়ে গেমটি বাংলাদেশে আন-ব্যান করে দেওয়া উচিৎ। এতে করে আমাদের দেশ থেকেও ভবিষ্যৎ এর অনলাইন ই-স্পোর্টস এর বিশ্বজয়ী ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অনেক টিম, ই-স্পোর্টস এর বিশ্ব মঞ্চে দেখা যাবে, ও অনেক বেকার তরুণ তাদের ক্যারিয়ার অনলাইনে লাইভ স্ট্রিম ও ই-স্পোর্টস এ গড়ে তুলবে।

Leave a Comment